যারা ব্যবসায়ী সমিতি গঠন করার পরিকল্পনা করেছেন, তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একটি সমবায় সমিতি গঠন করার পর সেটা নিবন্ধন করতে হলে আপনাকে জানতে হবে, কিভাবে একটি সমবায় সমিতি নিবন্ধন করতে হয়(Registration of Cooperative Societies)? এই বিষয় সর্ম্পকে। সুতরাং আজকে লেখাতে আমরা সহজ ভাষায় আপনাদের জন্য ধাপে ধাপে আলোচনা করব সমবায় সমিতি নিবন্ধন করার নিয়ম সম্পর্কে।
সমবায় সমিতি নিবন্ধন করার নিয়ম ও রেজিষ্ট্রেশন করার প্রক্রিয়া (Registration of Cooperative Societies):
অনেকগুলো প্রক্রিয়া অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনাকে সমবায় সমিতি নিবন্ধন করার জন্য সকল কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হবে। সাধারণত অন্যান্য যেসকল সমিতি রয়েছে, তার মতই খুব সহজেই সকল সমিতি রেজিস্ট্রেশন করা যায়না। যদি আপনারা সমবায় সমিতির রেজিস্ট্রেশন (Registration of Cooperative Societies) করে একটি সমবায় নাম্বার পেতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য নিচের প্রয়োজনীয় ধাপগুলোকে পরিপূর্ণ করতে হবে। তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার সমিতি নিবন্ধন করতে পারবেন। এবং আপনারা সবাই ব্যবসায়ী একটি সংগঠন তৈরি করতে পারবেন।
সমবায় সমিতি নিবন্ধন করার জন্য নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করুন—
নিজেদের সমস্যা চিহ্নিতকরণ করতে হবে
সমস্যা চিহ্নিতকরণ বলতে বুঝানো হয়েছে, আপনারা যেই সমিতি তৈরি করেছেন, সেই সমিতির মাধ্যমে আপনারা কি কি ধরনের সমস্যা গুলোকে সমাধান করতে পারবেন? এবং কি কি ধরনের সমস্যা গুলো রয়েছে? সে বিষয়ে সম্পর্কে আপনাদের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে।
এমনকি এখানে পরিষ্কার থাকতে হবে, কেন আপনারা সমিতি নিবন্ধনের (Registration of Cooperative Societies) জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন? অর্থাৎ সমিতি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে যে সকল সমস্যাগুলো রয়েছে। সেগুলো সমাধান করতে পারবেন কিনা? সে বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের আলোচনা করতে হবে। আপনাদের সমিতির সমস্যাগুলো এমন হতে হবে। যেগুলো সমাধান করার মাধ্যমে এখান থেকে সমিতির সকলেই উপকৃত হতে পারবেন।
যে সকল সমস্যাগুলো আপনারা উপস্থাপন করবেন। সেগুলো অবশ্যই যুক্তি সম্মত হতে হবে। অযুক্তিক কোন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। সরকারিভাবে সমিতির নাম্বার অনুমোদন পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাদেরকে যুক্তিসংগত সমস্যাগুলোকে উপস্থাপন করতে হবে।
কমপক্ষে ২০ জন সদস্য নিয়ে সমিতি গঠন করতে হবে:
বাংলাদেশের মধ্যে যারা সমবায় সমিতির গঠন করে থাকেন, তাদের এই বিষয়ে অবশ্যই জানা উচিত! আপনারা যদি বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী যদি প্রাইভেট লিমিটেড সমবায় সমিতির গঠন করে থাকেন, তাহলে আপনার সমিতির সদস্য কমপক্ষে ২০ জন থাকতে হবে।
মনে রাখবেন, এক বা দুই জন একত্রিত হয়ে সমবায় সমিতি গঠন করা যায় না। এজন্য আপনাদের সমিতিতে যদি ২০ জন সদস্য একটিভ থাকে অথবা ২০ এর অধিক সদস্য থাকে। তাহলে আপনি আপনার সমবায় সমিতি নিবন্ধন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সবার আলোচনার মাধ্যমে সংগঠক নির্বাচন করতে হবে
আপনাদের এই বিষয়ে অবশ্যই জানা থাকা প্রয়োজন। যে কোন একটি বিষয় এর সূচনা করতে হলে, অবশ্যই একজন প্রধান থাকা প্রয়োজন হয়। মনে করুন, বাংলাদেশের মধ্যে পাঠাও একটি উদ্যোগ। এই উদ্যোগটি যিনি গ্রহণ করেছেন, তিনি হচ্ছেন উদ্যোক্তা। তবে এই নয় যে, পাঠাও এর উদ্যোক্তা একা একা পাঠাও কে গঠন করেছেন।
পাঠাও এর উদ্যোক্তা উদ্যোগটি গ্রহণ করার পর একাধিক সদস্যদের সমন্বয়ে কোম্পানিকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য কাজ করেছেন। এক্ষেত্রে যদি আমরা পাঠাও এর মালিক কে সবাই চিনি, কিন্তু পাঠাও এর অন্যান্য সকল সদস্যদের কে আমরা চিনি না।
ন্যাশনাল ব্যাংক পারসোনাল লোন অন্যান্য ঋণ সুবিধা
ঠিক একই রকম আপনারা যদি একটি সমবায় সমিতির গঠন করে থাকেন, তাহলে আপনাদের একজন সংগঠক থাকতে হবে। যিনি এই সমিতির উদ্যোক্তা বা সমিতি প্রতিষ্ঠাকারি। আশা করি, আমি আপনাদেরকে বুঝাতে পেরেছি। তবে এটি মনে রাখবেন, যাকে আপনারা সংগঠক নির্বাচন করবেন, তিনি তাকে একজন উপযুক্ত ব্যক্তি হতে হবে।
আলোচনার মাধ্যমে সংগঠক নির্বাচন
এমন নয় যে, তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, এজন্য তাকে সংগঠক হিসেবে নির্বাচন করতে হবে। বাংলাদেশের মধ্যে অধিকাংশ সমবায় সমিতি নষ্ট হয়ে যায় সমিতির সংগঠক কে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে না পেরে। এইজন্য আমার পরামর্শ হচ্ছে আপনারা যখন কোন সংগঠককে নির্বাচন করবেন, তখন অবশ্যই সবার মতামত গ্রহণ করে এবং সবার প্রিয় একজন ব্যক্তি কে সমবায় সমিতির সংগঠক হিসেবে নির্বাচন করার চেষ্টা করবেন।
যেন কেউ তাকে অপছন্দ না করে। কারণ বাংলাদেশের মধ্যে প্রতিনিয়ত যে সকল সমবায় সমিতি গঠিত হয়, তার মধ্যে ৯৫ ভাগ সমবায় সমিতি নষ্ট হয়ে যায় নিজেদের মধ্যে অমিল তৈরি করে।
এলাকার গণ্যমান্য ও বিশিষ্ট বর্গের সাথে আলোচনা করুন
সাধারণত সমবায় সমিতি (Cooperative Societies) গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তরুণদের মধ্যে গঠিত হয়ে থাকে। যদি আপনারা একদল তরুণ হয়ে থাকেন। যারা পরবর্তী ভবিষ্যতকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সভায় সমিতির গঠন করতেছেন। তাহলে আপনাদের উচিত অবশ্যই আপনাদের এলাকার গণ্যমান্য ও বিশিষ্ট বর্গ ব্যক্তিদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করা।
কারণ আপনার যারা সিনিয়র রয়েছেন, তারা অবশ্যই আপনাদের থেকে এবিষয়ে ভালো জানবে। এবং কিভাবে আপনারা এগিয়ে গেলে সমবায় সমিতি সঠিকভাবে গঠন করতে পারবেন? এবং এটি কিভাবে পরিচালনা করলে আপনাদের জন্য ভালো হবে? সে বিষয়ে আপনাদের সিনিয়র ব্যক্তিদেরকে উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন।
গণ্যমান্য ও বিশিষ্ট বর্গের সাথে আলোচনা
পাশাপাশি আপনার এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কে উপদেষ্টা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। যেন তাদের সুপারিশ গ্রহণ করে আপনারা খুব দ্রুত আপনাদের সমবায় সমিতি নিবন্ধন (Registration of Cooperative Societies) করতে পারেন। সমবায় সমিতি দ্রুত নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য এটি হচ্ছে আপনাদের জন্য বিশেষ একটি টিপ। যদি এই টিপ আপনারা অনুসরণ করতে পারেন, তাহলে আশা করতেছি খুব দ্রুত আপনারা আপনাদের সমবায় সমিতি নিবন্ধন করতে সফল হবেন।
সমবায় সমিতির উদ্দেশ্য ও শ্রেণি নির্ধারণ করুন
এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এটা কখনো অবহেলা করা যাবে না। আপনাদের সমিতি নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনা করার পূর্বেই আপনাদেরকে এই বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে। এটি পরিষ্কার করতে হবে, আপনাদের সমিতি কোন ক্যাটাগরিতে সংগঠিত হচ্ছে? সমবায় সমিতির বিভিন্ন ধরনের ক্যাটাগরি রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনারা কোন ক্যাটাগরিতে সমবায় সমিতির গঠন করেছেন?
সে বিষয়টি আপনাদের কে খুঁজে বের করতে হবে। এবং একটি সঠিক ক্যাটাগরি আপনাদেরকে নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ আপনাদের সংগঠিত সমবায় সমিতি কোন শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত? সেটি আপনাদেরকে উল্লেখ করতে হবে।
সমবায় সমিতির উদ্দেশ্য ও শ্রেণি নির্ধারণ করুন
নির্বাচিত সমবায় সমিতি এটি কোন শ্রেণীর? সেটি বোঝার জন্য আপনাদের প্রথমেই সমিতির উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে। যদি আপনাদের সমিতির একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নির্বাচন করতে পারেন, তাহলে বুঝতে পারবেন যে, আপনাদের সমিতি কোন শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হবে। মনে রাখবেন, প্রতিটি সমিতি এর নির্দিষ্ট কিছু উদ্দেশ্য থাকে। যে উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নের জন্য সমবায় সমিতি গঠিত হয়।
আলোচনার মাধ্যমে সমিতির নাম নির্ধারণ করুন
যখন আপনারা আপনাদের সমিতির নাম নির্বাচন করবেন, তখন অবশ্যই সকল সদস্যদের মতামত গ্রহণ করবেন। যেন একটি সুন্দর সমিতির নাম আপনারা নির্বাচন করতে পারেন। আপনাদের সমিতির নাম পরবর্তীতে আপনাদের ব্র্যান্ডিং করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এজন্য সমবায় সমিতির নাম নির্বাচন করার জন্য সবার আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আপনাদের সমিতির সকল সদস্যদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে আপনারা একটি সমবায় সমিতির নাম নির্বাচন করতে পারেন।
সুন্দর একটি সমবায় সমিতির নাম নির্বাচন করার কৌশল সম্পর্কে জানতে আমাদেরকে কমেন্ট করে আপনার আগ্রহ জানিয়ে দিন। যেন আমরা পরবর্তীতে এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারি।
সমিতি নিবন্ধন প্রক্রিয়া (Association registration process)
কাজের এলাকা নির্বাচন করুন (Select the work area):
সমবায় সমিতি গঠন করার জন্য আপনাদের কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকা নির্বাচন করতে হবে। অর্থাৎ উক্ত এলাকার মধ্যে আপনারা আপনাদের সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। এর বাহিরে গিয়ে সমবায় সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবেনা। এক্ষেত্রে আপনারা যদি শুধুমাত্র ইউনিয়ন পরিষদ ভিত্তিক একটি সমবায় সমিতির গঠন করে থাকেন, তাহলে আপনাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম গুলো ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
যদি আপনারা পৌরসভা পর্যায়ে সমিতির গঠন করে থাকেন, তাহলে পৌরসভা পর্যায় পর্যন্ত আপনারা আপনাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। যদি আপনারা সিটি কর্পোরেশন ভিত্তিক সমাবায় সমিতি গঠন (Formation of cooperative societies) করে থাকেন, তাহলে পুরো শহরের মধ্যে আপনাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।
মূলধন ও শেয়ারের পরিমাণ নির্ধারণ করুন:
যেহেতু সভায় সমিতির একটি অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়ী সমিতি। এজন্য আপনাকে অবশ্যই এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যে, সমিতির মূলধন কত হবে? এবং প্রতিটি শেয়ারের মূল্য কত পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে? সে বিষয়ে সম্পর্কে। অবশ্যই প্রতিটি শেয়ারের মূল্য সকল সদস্যদের মতামত অনুসারে নির্ধারণ করা হবে। এই বিষয়টি ঠিক করার জন্য আপনাদের সকল সদস্যদের উপস্থিতি আবশ্যক।
যখন আপনি একটি সমিতি গঠন করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবেন, তখন আপনারা সকল সদস্যরা একসাথে বসেই কে কত পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করতে পারবে? এবং শেয়ারের পরিমাণ কত হলে সবার জন্য সুবিধা হবে? সে বিষয় নির্ধারণ করে আপনারা শেয়ারের পরিমাণ ঠিক করবেন। এবং শেয়ারের পরিমাণ অনুযায়ী আপনারা আপনাদের মূলধন কত হবে? সে বিষয়ে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
উপ-আইন প্রণয়ন করুন
একটি সমিতি পরিচালনা করার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং সমিতির নিয়ম শৃঙ্খলার জন্য অবশ্যই বাধ্যতামূলক। রুলস, রেগুলেশন, ও অর্ডার এর সমন্বয়ে উপ-আইন গঠিত হয়ে থাকে। যখন আপনারা আইন প্রণয়ন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন, তখন অবশ্যই সকল সদস্যদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক থাকতে হবে।
কেননা উপ-আইন সম্পর্কে আপনাদের সকল সদস্যদের কে অবগত করতে হবে। এবং এ আইন মূল আইনের বিপরীতে যেতে পারবেনা। মূল আইনের সাথে সাদৃশ্য রেখে আপনাদেরকে উপ-আইন তৈরি করতে হবে।
সদস্য ভর্তি ফি নির্ধারণ করতে হবে
যখন কোনো সদস্য সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য আগ্রহী হবেন, তখন উক্ত সদস্যকে সমিতির আওতাভুক্ত করার জন্য অনেকগুলো কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে যে সকল ধরনের খরচ রয়েছে। এ খরচ বহন করার জন্য অবশ্যই সদস্যদের ভর্তি ফি নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কত টাকা ভর্তি ফি নির্ধারণ করলে সমিতির জন্য যথোপযুক্ত হবে? সে বিষয়টির আলোচনা সাপেক্ষে সদস্য ভর্তি ফি নির্ধারণ করতে হবে।
শেয়ার ও সঞ্চয় আদায় সম্পর্কে
আমরা একটু আগে আলোচনা করেছি শেয়ারের পরিমাণ কত হবে? সে বিষয়ে সম্পর্কে। যেহেতু সমিতির জন্য শেয়ার বেচাকেনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জন্য আমরা এখানে শেয়ার ও সঞ্চয় আদায় সম্পর্কে আবার আলোচনা করতে চাই। যেন বিষয়টি আপনাদের মাথায় থাকে। সমবায় সমিতির প্রাণ হিসেবে শেয়ার ও সঞ্চয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে কিভাবে শেয়ারের অংশ ও সঞ্চয় এর অংশগুলো আদায় করা হবে? সে বিষয়ে সম্পর্কে আপনাদেরকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
হিসাবের খাতা ও রেজিস্টার প্রস্তুতকরণ
সমিতির সকল লেনদেন লিপিবদ্ধ করার জন্য এবং প্রমাণাদি সংরক্ষণ করার জন্য অবশ্যই হিসাব খাতা ব্যবহার করতে হবে। লিখিত হিসাবগুলো অবশ্যই সমিতির বিভিন্ন কাজের প্রমাণ হিসেবে পরবর্তীতে উপস্থাপন করা যাবে। এজন্য অবশ্যই হিসাব খাতা বাধ্যতামূলক সমিতির জন্য। এক্ষেত্রে রেজিস্টার প্রস্তুতকরণ বলতে বোঝানো হয়েছে।
কোন একটি কাগজকে সত্যায়িত করার জন্য সমিতির নির্দিষ্ট সিল বা সিগনেচার ব্যবহার করা। আপনারা হয়তো ব্যাংক এবং অন্যান্য সমিতির কার্যক্রম দেখেছেন। যখন তারা কয়েকটি কাগজকে সত্যায়িত করতে যায়, তখন অবশ্যই একটি সিল প্রদর্শন করেন। এই সিলের মাধ্যমে বুঝানো হয় কাগজ সত্যায়িত করা হয়েছে এবং কাগজটি গ্রহণযোগ্য।
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সমূহ গ্রহণ করা:
সাংগঠনিক সভা আহবান ও প্রস্তাবিত আলোচনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও লিখিতভাবে রেজুলেশন গ্রহণ সম্পর্কে আপনাদের অবগত থাকতে হবে। মনে রাখবেন, এই বিষয়গুলো সমবায় সমিতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাংগঠনিক সভার নিয়মিত আয়োজন করতে হবে।
এবং প্রস্তাবিত আলোচনা গুলো নিয়ে বারবার আলোচনা করতে হবে। এবং এই বিষয় গুলোর উপরে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এবং যে সকল সিদ্ধান্ত গুলো আপনারা গ্রহণ করবেন, তা লিখিত হতে হবে। যেন পরবর্তীতে কোন ধরনের সমস্যা তৈরি না হয়।
ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ
ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলোর প্রয়োজন হয়। সে সকল কাগজপত্র গুলো আপনাদের কে সংগ্রহ করতে হবে। মনে রাখবেন, সমবায় সমিতির হিসাব সংরক্ষণ করার জন্য ব্যাংক হিসাব খোলা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এবং সকল লেনদেন ব্যাংকের মধ্যে সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। ব্যাংক হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই এ বিষয়টি আপনাদের মনে রাখতে হবে যে, পরবর্তীতে ব্যাংকের এই লেনদেনগুলো যেন পরিষ্কার ভাবে যেকোন জায়গায় উপস্থাপন করা যেতে পারে।
যেহেতু সমবায় সমিতির একটি ব্যবসায়ী সমিতি। এজন্য এই জায়গায় টাকা-পয়সার লেনদেন খুব বেশি হবে। এই জন্য টাকা-পয়সা যেন পরবর্তীতে সদস্যদের মধ্যে কোন সমস্যা তৈরি করতে না পারে। সে জন্য একটি শক্ত হিসাব খোলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সাধারণ নীতিমালা অনুযায়ী যেভাবে একজন নাগরিক ব্যাংকে হিসাব তৈরি করে থাকেন। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সমবায় সমিতির হিসাব তৈরি করা যায় না। এজন্য হিসাব খোলার নিয়ম জানার জন্য আপনারা সরাসরি ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যবস্থা গ্রহণ
এবং সমবায় সমিতির হিসাব খোলার জন্য কি কি কাগজপত্র তাদেরকে জমা দিতে হবে? সে বিষয়ে সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। মনে রাখবেন, একেক ধরনের ব্যাংক একেক রকমের ডকুমেন্ট আপনাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারে। এজন্য আপনারা কোন ব্যাংকে হিসাব তৈরি করবেন? সে ব্যাংকে গিয়ে যোগাযোগ করবেন।
সমবায় সমিতি নিবন্ধনের জন্য কাগজপত্র প্রস্তুত করুন
এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা যে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। সে বিষয়গুলো নিবন্ধন করার পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যদি উপরোক্ত কাজগুলো আপনি সম্পন্ন করে না থাকেন, তাহলে কখনো আপনারা আপনাদের সমবায় সমিতি নিবন্ধনের জন্য কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করতে পারবেন না। যদি উপরোক্ত কাজগুলো করে থাকেন, তাহলে নিবন্ধনের জন্য কাগজপত্র সংগ্রহ করে সেগুলো প্রস্তুত করতে পারবেন।
পরবর্তী আর একটা লেখার মধ্যে আমরা আলোচনা করবো। কি কি ধরনের কাগজপত্র আপনাদেরকে সংগ্রহ করতে হবে? সে বিষয়ে সম্পর্কে। যেহেতু এই লিখাটি অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য আমরা সমবায় সমিতি নিবন্ধন করার জন্য কি কি ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হবে? এই বিষয়ে এখানে আলোচনা করছি না।
তবে আপনাদের আগ্রহ দেখতে পেলে আমরা এ আর্টিকেলটির মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। যেন নতুন আরেকটি আর্টিকেল লিখতে না হয়। কারণ পাঠকরা সব সময় ছোট ছোট লেখাগুলো পড়তে আগ্রহী হয়ে থাকেন। এজন্য আমরা ছোট লেখা গুলো আমাদের ব্লগ সাইটে প্রকাশ করার চেষ্টা করে থাকি।
কাগজপত্র সমবায় সমিতি নিবন্ধনের (Registration of Cooperative Societies) জন্য জমা প্রদান করুন:
যদি আপনারা সভায় সমিতির নিবন্ধন (Registration of Cooperative Societies) পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত বুঝে থাকেন। এবং আমাদের আলোচনা অনুযায়ী নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য সকল কাগজপত্র সংগ্রহ করে থাকেন। আপনারা আপনাদের কাগজপত্র গুলো উপজেলা সমবায় সমিতির কার্যালয় অথবা স্থানীয় সমবায় সমিতির কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। মনে রাখবেন, সমবায় সমিতি আবেদন করতে হলে একটি নির্দিষ্ট আবেদন ফি জমা দিতে হয়। এক্ষেত্রে আপনাদের মূলধনের উপরে নির্ভর করবে কত টাকা আবেদন ফি জমা দিতে হবে? সে বিষয়ে সম্পর্কে।
যদি আপনাদের মূলধনের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আবেদন ফি বেশি হবে। যদি মূলধনের পরিমাণ কম হয়, তাহলে আপনাদের সমবায় সমিতি নিবন্ধনের জন্য আবেদন ফি কম হবে। এক্ষেত্রে আপনারা সঠিক তথ্য জানার জন্য আপনাদের উপজেলা সমবায় কার্যালয় অথবা স্থানীয় সমবায় অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। তাঁরা আপনাদেরকে সঠিক তথ্য সরবরাহ করবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক ব্যক্তির সাথে আপনাদের যোগাযোগ করা প্রয়োজন।
0 মন্তব্যসমূহ